পারস্য পন্ডিত ইমাম আল-গাজ্জালী

 পারস্য পন্ডিত ইমাম আল-গাজ্জালীঃ


ইমাম গাজ্জালী ১০৫৮ ঈসায়ীতে বর্তমান ইরানের তুস শহরে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও তিনি ছিলেন পারস্য বংশোদ্ভুত।শৈশব থেকেই তিনি ইসলামের মৌলিক শিক্ষা ও ইসলামী আইন সম্পর্কে অধ্যয়নে লিপ্ত হন। পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি বাগদাদের বিখ্যাত নিযামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গমন করেন।শিক্ষাজীবন সমাপ্তির পর ১০৮৫ ঈসায়ীতে তিনি ইসপাহানে সেলজুক প্রধানমন্ত্রী নিজামুল মুলুকের দরবারে যোগদান করেন। নিজামুল মুলুক শিক্ষার সম্প্রসারনের জন্য মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করার জন্য খুবই পরিচিত ছিলেন। 







তিনি ইমাম গাজ্জালীকে ১০৯১ সালে বাগদাদের নিযামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করেন। বাগদাদে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইমাম গাজ্জালী ছিলেন মর্যাদাবান ও জনপ্রিয় একজন শিক্ষক এবং প্রায়শই তার পাঠদানের সময় নির্ধারিত শ্রেনীকক্ষে ছাত্রদের ভীড় জমে যেত।১০৯৫ ঈসায়ীতে আল-গাযালী তার নিজের মধ্যে এক আধ্যাত্মিক চিন্তাগত সংকটে উপনীত হন। তার আত্মজীবনী অনুসারে, তার শিক্ষা প্রদান যেন আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য নয়, বরং তা যেন নিজের খ্যাতি ও মর্যাদা বৃদ্ধির উদ্দেশ্য নিয়েই পরিচালিত হচ্ছিল।নিজের আধ্যাত্মিক সংকট উপলব্ধি করে তিনি নিযামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে তার পদ পরিত্যাগ করে দামিশক, জেরুসালেম, হিজাযসহ মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করেন। তার এই ভ্রমণে তিনি তার আত্মার  পরিশুদ্ধতা অর্জনের উপর গুরুত্ব প্রদান করেন এবং এরসন্ধানে তিনি তার সময়ের প্রচলিত বিভিন্ন দর্শনের পাঠের পরীক্ষণ করেন।১১০৬ ঈসায়ীতে তিনি বাগদাদে ফিরে আসেন এবং পুনরায় শিক্ষকতা শুরু করেন। আত্ম পরিশুদ্ধি অর্জনে তার দীর্ঘপ্রচেষ্টা সাধারণ মানুষের উপর বিপুলভাবে প্রভাব বিস্তার করে কিন্তু একইসময়ে তিনি কিছু মতবিরোধের সম্মুখীন হন। ফলে তিনি তার জন্মস্থান তুসে ফিরে যান যেখানে তিনি ১১১১ ঈসায়ীতে ইন্তেকাল করেন।

No comments

Powered by Blogger.